রমজান মাসে করনীয় আমল সমূহ জানতে ক্লিক করুন
রমজান মাসে করনীয় আমল সমূহ, জানতে অনেকেই অনেক ভাবে খোঁজা খুঁজি করছেন। আজকের আমরা আপনাদের জানাবো রমজান মাসে কি কি আমল করবেন এবং কোন আমলের কি ফজিলত।

পোস্ট সূচিপত্রঃ রমজান মাসে করনীয় আমল সমূহ
- রমজান মাসে করনীয় আমল সমূহ
- সিয়াম পালন করা
- কুরআন তিলাওয়াত এবং খতম
- নামাজ আদায় করা
- সালাতুত তারাবির নামাজ আদায় করা
- আল্লাহ্ তায়ালার শুকরিয়া আদায় করা
- তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া
- দান খইরাত করা
- যাকাত প্রদান করা
- শেষ কথাঃ রমজান মাসে করনীয় আমল সমূহ
রমজান মাসে করনীয় আমল সমূহ
রমজান মাসে করনীয় আমল সমূহ, সম্পর্কে সবাই জানেন না। তাই আপনাদের সুবিধার্থে আজকে আমাদের এই আর্টিকেলটি তৈরি করা। আজকের এই আর্টিকেলে আপনাদের রমজান মাসে কোন কোন আমল করতে হয় সকল তথ্য জানানোর চেষ্টা করবো। তাই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আশা এই বিষয়ে সম্পূর্ণ ধারনা পেয়ে যাবেন।
রমজান মাসে অনেক ফযিলত আছে। পুরো এগারো মাসে যেই ফযিলত পাওয়া যায় না এই রমজানের এক মাসে তার থেকে বেশি ফযিলত পাওয়া যায়। এই রমজান মাসে মহান আল্লাহ্র কাছে যা চাওয়া হয় আল্লাহ্ তায়ালা সেটা পূরণ করে দেয়। আমাদের জীবনের যত গুনাহ আছে রমজান মাসে তা মাফ করে নেওয়ার সুযোগ দেন আল্লাহ্ তায়ালা। কারন রমজান মাসকে বলা হয়েছে গুনাহ মাফের মাস।
আরো পড়ুনঃ সাদাকাতুল ফিতরা আদায়ের ইসলাম সম্মত নিয়ম সমূহ ২০২৫
রমজান মাসের আমল বলতে সাধারনত রমজান মাসে রোজা রাখা এটা বাদ্ধতা মূলক। তাই রমজান মাসে রোজা রাখবেন তার সাথে সাথে কুরআন তেলাওয়াত, নামাজ, বেশি বেশি জিকীর আজগার করা, তারাবী পড়া, আরো অনেক নফল ইবাদত। যা আমাদের জীবনকে এবং মনকে প্রশান্তি এনে দেয়। এবং আমাদের জীবনের সকল গুনাহ মাফ করে দেয়।
সিয়াম পালন করা
রমজান মাসে সিয়াম পালন করা একজন মুসলিমের জন্য ফরজ। আর ইসলামের পাঁচটি রুকনের মধ্যে সিয়াম পালন করা একটি রুকন। তাই রমজান মাসে প্রধান আমল হল সিয়াম পালন করা। সিয়াম পালনের ফযিলত সম্পর্কে মহানবি হযরত মোহাম্মাদ (সঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি ঈমানের এবং ইখলাসের সাথে এবং আল্লাহ্কে সন্তুষ্টি করার জন্য সিয়াম পালন করবে আল্লাহ্ তায়ালা তার অতীতের সকল গুনাহ মাফ করে দিবে। (সহিহ বুখারিঃ ২০১৪)।
অন্য আরেকটা হাদিসে বর্ণিত আছে যে, যদি কেউ আল্লাহ্র রাস্তায় আল্লাহ্ কে খুশি করার জন্য একদিন সিয়াম পালন করবে মহান আল্লাহ্ তায়ালা তাকে জাহান্নামের অগ্নি থেকে সত্তর বছরের রাস্তা পরিমান দূরবর্তী স্থানে রাখবেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ২৭৬৭)। তাই রমজান মাসের ইবাদতের মধ্যে রোজা রাখা আমাদের জন্য প্রধান ইবাদত। তাই শরীর সুস্থ থাকলে অবশ্যই রোজা রাখবেন।
কুরআন তিলাওয়াত এবং খতম
রমজান মাসে করনীয় আমল সমূহ এর মধ্যে কুরআন তিলাওয়াত একটি অতি ফযিলত পূর্ণ ইবাদত। হাদিসে এসেছে সারা বছরে এক হরফ কুরআন তিলাওয়াত করলে যে সওয়াব পাওয়া যায় রমজান মাসে তার চেয়ে দিগুণ সওয়াব প্রদান করে থাকে আল্লাহ্ তায়ালা। তাই রমজান মাসে এক হরফ কুরআন তিলাওয়াত করা আমাদের জন্য অনেক দরকারি। যদি আপনি প্রতিদিন বেশি করে কুরআন তিলাওয়াত করতে না পারেন তাও এক রুকু তিলাওয়াত করার চেষ্টা করবেন।
রমজান মাসে এক রুকু তিলাওয়াত অনেক গুরুত্বপূর্ণ একজন মুমিন মুসলিম ব্যক্তির জন্য। এই রমজান মাসে যদি আপনি একবার কুরআন খতম করতে পারেন তাহলে এই সওয়াব এর তো কোন শেষ নেই। আর যদি আপনি কুরআন পড়তে না পারেন তাহলে আপনি রমজান মাসে বেশি বেশি তাসবিহ, তাহলিল এবং জিকীর করবেন। তবে সম্ভব হলে কুরআন তিলাওয়াত শিখে নিবেন এতে আপনি অনেক লাভবান হবেন।
নামাজ আদায় করা
নামাজ এমন একটি ইবাদত যা একজন মুসলিমকে সব সময় সৎ এবং ইসলামের পথে রাখতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে থাকে। নামাজ মুসলিম জাতির জন্য ফরজ করেছেন আল্লাহ্ তায়ালা। তাই আমাদের সব সময় নামাজ আদায় করা দরকার। আর তার মধ্যে রমজান মাসে তো নামাজ আদায় করার অনেক অনেক বেশি ফযিলত আছে।
রমজান মাসে সিয়াম পালন এবং কুরআন তিলাওয়াতের সাথে সাথে নামাজ আদায় করা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। নামাজ মানুষকে পাপ কাজ থেকে দূরে রাখে। নামাজ আদায় করলে আল্লাহ্ নিজে জান্নাতের পথ সুগম করে দিবেন। পবিত্র কুরআন মাজিদে বলা হয়েছে, নিশ্চিত সালাত মুমিনদের উপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরজ। (সুরা নিসা, আয়াতঃ ১০৩)।
.webp)
সালাতুত তারাবির নামাজ আদায় করা
এখন আমি আপনাদের জানাবো সালাতুত তারাবি নামাজ পড়ার ফযিলত সম্পর্কে। রমজান মাসে করনীয় আমল সমূহ, এর মধ্যে সালাতুত তারাবি একটি অন্যতম ইবাদত, এই রমজান মাসে আল্লাহ্ তায়ালা তার বান্দাদের জন্য বাড়তি সওয়াবের জন্য এই নামাজ কে দিয়েছেন। আমাদের প্রিয় নবি হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) পুরো রমজান মাস এই তারাবির নামাজ আদায় করতেন।
তারাবির নামাজের এত ফযিলত যা বলে শেষ করা যাবে না। হাদিসে এসেছে যে ব্যক্তি তার মন থেকে আল্লাহ্কে সন্তুষ্টি করার জন্য এই নামাজ আদায় করবে আল্লাহ্ তায়ালা তার জীবনের অতীতের সকল গুনাহ মাফ করে দিবেন। তারাবি নামাজ হল কিয়ামুল লাইল। যার অর্থ রাতের সালাত বা সালাতুত তারাবি। তারাবি নামাজ একা একা ও আদায় করা যায় তবে এই নামাজ জামাতের সাথে আদায় করা সুন্নাহর অন্তর্ভুক্ত।
আল্লাহ্ তায়ালার শুকরিয়া আদায় করা
রমজান মাসের ইবাদতের মধ্যে এই একটি ইবাদত যা দ্বারা আমাদের সকল কাজের বরকত আসে। এখন আপনাদের জানাব আল্লাহ্ তায়ালার শুকরিয়া আদায় করলে আমাদের কি কি লাভ আছে। এবং আল্লাহ্র পক্ষ থেকে কি সাহায্য পাবো আমরা। তাহলে চলুন দেরি না করে শুরু করা যাক। রমজান মাস পাওয়া আমাদের জন্য সৌভাগ্যের একটি বিষয়।
সেই জন্য এই রমজান মাসে আমাদের আল্লাহ্ তায়ালার বেশি বেশি শুকরিয়া আদায় করা দরকার। আপনি যেই রমজান পাবেন সেই রমজানে আল্লাহ্ তায়ালার কাছে পার্থনা করবেন যেন আগামী রমজান পান আপনি। রমজান মাস সম্পর্কে কুরআনে পাওয়া গিয়েছে যে, আর যাতে তোমরা সংখ্যা পূরণ কর এবং তিনি তোমাদের যেই হিদায়েত দিয়েছেন তার জন্য আল্লাহ্র বড়ত্ব ঘোষণা করো এবং যাতে তোমরা শোকর করো। (সুরা আল- বাকারা, আয়াতঃ ১৮৫)।
আরো পড়ুনঃ ঈদের দিনে করনীয় ও বর্জনীয় কাজ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
আল্লাহ্ তায়ালা আমাদের যা দিয়েছে তার যদি শুকরিয়া আদায় করা হয় তাহলে আল্লাহ্ তায়ালা আমাদের সেই সম্পদের দুই গুণ করে দিবেন। তাই এই রমজান মাসে অধিক পরিমানে আল্লাহ্র শুকরিয়া আদায় করা দরকার। আয়েশা (রা.) বলেন, নবী (সঃ) নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করে বলতেন অর্থাৎ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্র জন্য (সুনান আত- তিরমিজি, হাদিসঃ ২৭৩৮)।
তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া
প্রিয় পাঠক এখন আপনাদের সাথে আলোচনা করব রমজান মাসে করনীয় আমল সমূহ এর মধ্যে আর একটি বড় আমল সম্পর্কে। এখন আপনাদের জানাবো রমজান মাসে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ার ফজিলত সম্পর্কে। তাহাজ্জুদ নামাজ এমন একটি নামাজ যা শুধু রমজান মাসেই না বরং সারা বছরই পড়া হয়। আর এর ফজিলত বলতে গেলে শেষ হবার না।
রমজান মাস একটি ফযিলত এবং বরকতের মাস এই মাসে তো শুধু ফযিলত আর ফযিলত। তাই এই রমজান মাসে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করলে বেশি বেশি ফজিলত পাওয়া যায়। তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করতে হয় গভীর রাতে তাই রমজান মাসে যেহেতু সাহরি খাওয়ার জন্য উঠতে হয় সেহেতু রমজান মাসে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া সহজ হয়।
হাদিসে এসেছে আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে নবী (সা.) বলেছেন ফরজ সালাতের পর সর্বোত্তম সালাত হলো রাতের সালাত বা তাহাজ্জুদের সালাত। (সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ২৮১২)। তাই যতো পরিমানে পারা যায় আপনারা সবাই রমজান মাসে এই তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করার চেষ্টা করবেন।
দান খইরাত করা
রমজান মাসে এই কাজ টি বেশি বেশি করার চেষ্টা করবেন। দান খইরাত করা আল্লাহ্ তায়ালা অনেক খুশি হয়। আল্লাহ্ তায়ালা দান খইরাত করাকে একটি বিশেষ আমল বলেছেন। কারন আপনি যদি এই রমজান মাসে বেশি বেশি দান খইরাত করতে পারেন এবং কিছু গরিব অসহায় মানুষের পাশে দাড়াতে পারেন তাহলে এর চেয়ে বেশি ফজিলত পূর্ণ আমল আর কি আছে।
রমজান মাসে একটি ভালো কাজ অন্য সব মাসের চেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য এবং বেশি উত্তম। তাই রমজান মাসে যথা সম্ভব বেশি বেশি ভালো কাজ করার চেষ্টা করবেন। এমনিতেও আল্লাহ্ তায়ালা বলেছেন দান খইরাত করলে আল্লাহ্ তায়ালা তার সম্পদের মধ্যে বরকত প্রদান করেন। এবং আল্লাহ্ তায়ালা তার সম্পদের পরিমান দিগুণ করে দেয়।
যাকাত প্রদান করা
রমজান মাসের আর একটি বড় ইবাদত হলো যাকাত প্রদান করা। রমজান মাসে যাকাত দিলে কি হয় এবং কেন যাকাত আদায় করতে হবে রমজান মাসে এই বিষয়ে এখন আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করবো। যাকাত এমন একটি আমল বা করনীয় যা আমাদের দেওয়া বাধ্যতা মূলক। আমাদের যদি যাকাত দেওয়ার সামর্থ্য থাকে তাহলে যাকাত আদায় করা আমাদের জন্য ফরজ।
.webp)
শেষ কথাঃ রমজান মাসে করনীয় আমল সমূহ
প্রিয় পাঠক আজকে আমরা আপনাদের সাথে আলোচনা করলাম রমজান মাসে করনীয় আমল সমূহ সম্পর্কে। যা জানা একজন মুসলিম এর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই আর্টিকেলে আপনাদের জানানো হয়েছে রমজান মাসে কি কি আমল করলে আমরা আল্লাহ্র নিকটে যেতে পারবো। এবং কি কি আমল করলে আল্লাহ্র সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারব। আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হতে পারবেন। আর আপনি যদি উপকৃত তাহলে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
স্বপ্ন বাংলার নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url