থানকুনি পাতার চমকপ্রদ উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে ২০ টি তথ্য
থানকুনি পাতার চমকপ্রদ উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে সবাই জানে না। প্রাচীনকাল থেকেই এই পাতা ঔষধি উপকরন হিসাবে ব্যাবহার হয়ে আসছে। এই পাতার উপকারি গুনাগুণ সম্পর্কে জানলে আপনার চোখ কপালে উঠবে।

পোস্ট সূচিপত্রঃ থানকুনি পাতার চমকপ্রদ উপকারিতা
- থানকুনি পাতার চমকপ্রদ উপকারিতা
- থানকুনি পাতার পুষ্টি উপাদান
- থানকুনি পাতা খাওয়ার নিয়ম
- যৌবন ধরে রাখতে থানকুনি পাতা
- ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে থানকুনি পাতা
- থানকুনি পাতার অপকারিতা
- চুলের জন্য থানকুনি পাতার উপকারিতা
- শেষ কথাঃ থানকুনি পাতার চমকপ্রদ উপকারিতা
থানকুনি পাতার চমকপ্রদ উপকারিতা
থানকুনি পাতার চমকপ্রদ উপকারিতা, সম্পর্কে আমারা অনেকেই জানিনা। আজ আমরা থানকুনি পাতার উপকারিতা সম্পর্কে জানবো। আমাদের বাড়ির আশে পাশেই রাস্তার পাশে হয়ে থাকা এই পাতা যে আমাদের কতো উপকার করে তার কোনো ধারনাই নেই আমাদের। এই পাতা একটি পরিচিত ঔষধি পাতা যা আমাদের নানা সমস্যার সমাধান করে থাকে। সাধারনত গ্রাম অঞ্চলে এই পাতা প্রচুর পরিমানে পাওয়া যায় এটি গ্রামের মানুষ অনেক রোগের ঔষধ হিসাবে ব্যাবহার করে। চলুন এবার দেখি থানকুনি পাতার ২০ টি উপকারিতা।
- থানকুনি পাতায় থাকায় অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ত্বকের যেকোনো দাগ দূর করে। এবং ত্বক উজ্জ্বল রাখতে বড় ভূমিকা পালন করে।
- থানকুনি পাতায় থাকা ফাইবার আমাদের হজমের সমস্যা সমাধানে কাজ করে।
- থানকুনি পাতায় থাকা বিটা উপাদান আমাদের ক্ষুধা বাড়িয়ে দেয় এবং খাবারের আগ্রহ তৈরি করে থাকে।
- এই পাতায় রয়েছে ভিটামিন এ যা চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে এবং ভালো রাখতে সাহায্য করে।
- থানকুনি পাতায় রয়েছে পটাশিয়াম যা আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।
- থানকুনি পাতায় রয়েছে এমন ভিটামিন যা আমাদের দেহের ক্ষত সারিয়ে নতুন করে গঠন করতে সাহায্য করে।
- এই পাতায় থাকা ট্রাইটারপেয়েড উপাদান যা আমাদের সৃতি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
- এই পাতায় থাকা আরো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান আমাদের নানা ব্যাথা সারাতে বিশেষ করে বাথের ব্যাথা সারাতে কার্যকারী।
- এতে থাকা উপাদান রক্তের ক্ষতিকর উপাদান দূর করে ব্রনের সমস্যা সমাধান করে।
- থানকুনি পাতায় রয়েছে ন্যাচেরাল উপাদান যা শরীরে শক্তি যোগায় এবং রক্ত সংশোধন বৃদ্ধি করে।
- থানকুনি পাতায় থাকা আরো কিছু উপাদান যা কাশি ও গলা ব্যাথা দূর করে।
- থানকুনি পাতায় থাকা ইনসুলিন যা কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে ও রক্তের শর্করার মাত্রা ঠিক রাখে।
- এই পাতায় থাকা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান প্রস্রাবের যে কোন সমস্যা সমাধান করে।
- থানকুনি পাতায় থাকা উপাদান শরীরের অতিরিক্ত পানি কমিয়ে ওজন কমাতে সাহায্য করে।
- থানকুনি পাতায় রয়েছে প্রাকৃতিক তেল যা আমাদের ঠোঁটের শুষ্কতা রোধ করে এবং ঠোঁট নরম রাখে।
- থানকুনি পাতায় থাকা একটি উপাদান শরীরের তাপমাত্রা ঠিক রাখে ও জ্বর কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- থানকুনি পাতায় থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান ত্বকের কোষ পুনর্গঠন করে এবং বারধকের লক্ষন কমিয়ে দেয়।
- এতে থাকা উপাদান মানসিক চাপ কমাতে অনেক কার্যকারী ভূমিকা পালন করে।
- থানকুনি পাতা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করে এবং বুক জালাপড়া কমাতে সাহায্য করে।
- থানকুনি পাতায় থাকা উপাদান লিভারের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
থানকুনি পাতার পুষ্টি উপাদান
থানকুনি পাতার উপকারিতা বলে গেলে শেষ হয় না। এতক্ষন আপনাদের জানালাম থানকুনি পাতার উপকারিতা। এবার আপনাদের জানাবো এই পাতার পুষ্টি উপদান। এই পাতায় থাকা হাজারো পুষ্টি উপাদান যা আমাদের দেহের নানা সমস্যার সমাধান করে থাকে। থানকুনি পাতা আমাদের খাদ্য ঘাড়তি পুরন করতে সাহায্য করে এবং পুষ্টি যোগায়। তাহলে দেরি না করে চলুন দেখি ১০০ গ্রাম থানকুনি পাতায় কতটুকু পুষ্টি উপাদান থাকে।
- প্রোটিন এর পরিমান ৩.৭ গ্রাম
- শক্তির পরিমান ৪৩ কিলক্যালরি
- ফাইবার এর পরিমান ১.৬ গ্রাম
- কার্বোহাইট্রেড এর পরিমান ৭.৮ গ্রাম
- ফ্যাট এর পরিমান ০.৯ গ্রাম
- ভিটামিন এ এর পরিমান ১৮০ ইউনিট
- ভিটামিন সি এর পরিমান ৪.০ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন বি২ এর পরিমান ০.১৯ মিলিগ্রাম
- আয়রন এর পরিমান ৫.৬ মিলিগ্রাম
- ক্যালসিয়াম এর পরিমান ১৭১ মিলিগ্রাম
- ফসফরাস এর পরিমান ৫৭ মিলিগ্রাম
- পটাশিয়াম এর পরিমান ৩৪৪ মিলিগ্রাম
থানকুনি পাতা খাওয়ার নিয়ম
থানকুনি পাতা খাওয়ার কিছু নিয়ম সম্পর্কে আজ আপানাদের জানাবো। থানকুনি পাতার চমকপ্রদ উপকারিতা সম্পর্কে আশা করি সঠিক তথ্য পেয়েছেন। এখন এই পাতা খাওয়ার নিয়ম জানা দরকারি। আপনি যে কোনো কিছু খাওয়ার আগে তার নিয়ম সম্পর্কে যেনে খাবেন। এতে আপনার শরীর সুস্থ থাকবে। থানকুনি পাতা কাচা খাওয়া রান্না করে খাওয়া আবার জুস বানিয়েও খাওয়ার প্রচলন আছে আমাদের সমাজে।
আরো পড়ুনঃ অর্জুন ছালের বিস্ময়কর কিছু উপকারিতা ও অপকারিতা
থানকুনি পাতা যে কোনো ভাবেই খেলে উপকার পাবেন। যেমন আপনি চাইলে থানকুনি ভালো করে ধুয়ে সালাদ বানিয়ে খেতে পারেন। এটি সাস্থের জন্য অনেক উপকারি। আবার ১০-১২ টি পাতা নিয়ে ব্লেন্ড করে নিয়ে প্রতিদিন সকালে খেলে আপনার শরীরের বিষাক্ত পদার্থ বের হয়ে যাবে। থানকুনি পাতা সিদ্ধ করে একটু লবন, পেঁয়াজ, সরিষার তেল দিয়ে ভর্তা করে খেতে পারেন।
আবার থানকুনি পাতা ব্লেন্ড করে নিয়ে মধু বা দইয়ের সাথে মিশিয়ে ত্বকে লাগালে আপনার ত্বকের উজ্জলতা বাড়বে। আপনি চাইলে থানকুনি পাতা শুকিয়ে গুড়ো করে সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন। এই পাউডার আপনি চাইলে প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস গরম পানির সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন এতে করে আপনার সাস্থের উন্নতি হবে।
যৌবন ধরে রাখতে থানকুনি পাতা
যৌবন ধরে রাখতে থানকুনি পাতার চমকপ্রদ বেশ কিছু উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চলেছি। আমাদের দেহের সুস্থতা সবচেয়ে বড় সম্পদ। আর এই সম্পদ রক্ষা করতে আমারা সব কিছু করতে পারি। তাই আমাদের দেহকে সুস্থ রাখতে থানকুনি পাতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই থানকুনি পাতায় রয়েছে উচ্চমাত্রায় অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান। যা আমাদের দেহের ফ্রী রেডিকেল দূর করে যার ফলে আমাদের কোষের ক্ষতি রোধ হয়।
থানকুনি পাতায় থাকা বিশেষ কিছু উপাদান যা আমাদের শরীরে বারধ্যকের চাপ পড়তে দেয় না। এই পাতা আমাদের শরীরে কোলাজেন এর উপাদান বৃদ্ধি করে দেয়। এই কোলাজেন আমাদের ত্বকের ইলাস্টিসিটি ধরে রাখতে সাহায্য করে ও বলি রেখা গঠনে বাধা দিয়ে থাকে। আবার থানকুনি পাতায় রয়েছে ভিটামিন সি যা আমাদের ত্বকের মেলানিন উপাদান নিয়ন্ত্রন করে এবং ত্বকের উজ্জলতা বাড়াতে কাজ করে থাকে।
ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে থানকুনি পাতা
ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে থানকুনি পাতার গুরুত্ব অপরিসীম। আমারা সবাই চাই আমাদের ত্বক সুন্দর থাকুক। ত্বকের উজ্জলতা বৃদ্ধি পাক, ত্বক এ ব্রনের সমস্যা দূর হোক। এই সব সমস্যার সমাধান এই থানকুনি পাতা। এই পাতায় থাকা বিটা ক্যারোটিন, অ্যামাইনো এসিড, ফাইটকেমীকেল, ফয়াটি এসিড আমাদের ত্বকের পুষ্টির ঘাড়তি পুরন করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
এর ফলে ত্বকের উজ্জলতা বৃদ্ধি পায় এবং ত্বকের বডিয়ে যাওয়ার সম্ভচাবনাও অনেক অংশে কমে। তাই আমাদের ত্বককে সুন্দর ও উজ্জ্বল রাখতে থানকুনি পাতার বিকল্প নেই। এই পাতা আমাদের দেহেরে নানা সমস্যা সমাধান করে থাকে। প্রাচীনকাল থেকেই ভারতীয় উপমহাদেশে এই পাতা ঔষধ হিসাবে ব্যাবহার করছে কবিরাজ, ডাক্তার ইত্যাদি।
আরো পড়ুনঃ শিমুল মূল খেলে কি হয় (উপকারিতা ও সতর্কতা)
থানকুনি পাতার অপকারিতা
এতক্ষন আমরা জানলাম থানকুনি পাতার চমকপ্রদ উপকারিতা। তবে সকল জিনিসেরই উপকারিতা আর অপকারিতা দুই দিক থাকে। এতক্ষন যেমন যানলাম এর উপকারিতা এবার জানবো এর কিছু অপকারিতা। কখন কিভাবে কতটুকু ব্যাবহার করলে এর উপকারিতা হবে এবং কতটুকু ব্যাবহার করলে এর অপকারিতা হবে। এই বিষয় জেনে আমাদের এই পাতা ব্যাবহার করতে হবে।
এই পাতা অতিরিক্ত খেলে বা ব্যাবহার করেলে সমস্যা হতে পারে। থানকুনি পাতা অতিরিক্ত মাত্রায় খেলে লিভারের সমস্যা হতে পারে। মাথা ঝিমঝিম লাগতে পারে, স্নায়ু দুর্বল হতে পারে। তাই এটি সঠিক মাত্রায় খেতে হবে। আবার যদি বেশি খেয়ে ফেলেন এতে হিতে বিপরিত হতে পারে। যেমন গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমার বদলে বেড়ে যেতে পারে। ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আবার এটি গর্ভবতী মহিলাদের জন্য একদমি খাওয়া ঠিক না।
চুলের জন্য থানকুনি পাতার উপকারিতা
চুলের জন্য থানকুনি পাতার বেশ কিছু আশ্চর্য তথ্য জানতে চলেছি। থানকুনি পাতায় থাকা হাজারো পুষ্টি উপাদান চুলের বৃদ্ধি, চুল পড়া, চুল মজবুত করা এবং মাথার খুসকি ইত্যাদি সমস্যার সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ। তাহলে চলুন দেখি চলের জন্য থানকুনি পাতা কিভাবে সহায়ক ভূমিকা পালন করে তা জেনেনি।
- থানকুনি পাতায় এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান পাওয়া যায় যা আমাদের চুলকে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে।
- এই পাতায় থাকা আয়রন স্কাল্পে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় ও চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে।
- থানকুনি পাতায় থাকা ভিটামিন সি, চুলের গোঁড়া শক্তিশালী করে এবং চুল পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করে।
- থানকুনি পাতায় থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট চুলের কোষ গুলোকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করে এবং চুলের বৃদ্ধিতে ভূমিকা পালন করে।
- থানকুনি পাতায় রয়েছে ট্যানিন যা চুল ভাঙ্গা রোধ করতে সাহায্য করে।
- এই পাতায় থাকা আরো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান খুসকি প্রতিরোধে সাহায্য করে।
- থানকুনি পাতায় রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম উপাদান যা চুলের ঘনত্ব বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে।
থানকুনি পাতার তেল আবার চুলের জন্য অনেক উপকারি। এটি ব্যাবহারে আপনার র চুল হয়ে উঠবে সিল্কি এবং উজ্জ্বল। তবে এই তেল ব্যাবহার করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। তবে এই তেল ব্যাবহার এর সময় খেয়াল রাখতে হবে এ কেমন পতিক্রিয়া দিচ্ছে।
শেষ কথাঃ থানকুনি পাতার চমকপ্রদ উপকারিতা
থানকুনি পাতার চমকপ্রদ উপকারিতা সম্পর্কে আজ আপানদের সাথে আলোচনা করা হয়েছে। থানকুনি পাতার উপকারিতা এর অপকারিতা, কিভাবে খেতে হয় এই পাতা, এই পাতার হাজারো পুষ্টিগুণ। এই সকল বিষয় সুন্দর ভাবে তুলে ধরা হয়েছে এই আর্টিকেলে। আশা করি আপনি এই আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হতে পেরেছেন। আর আপনি যদি এই আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
স্বপ্ন বাংলার নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url