কোন ভিটামিনের অভাবে শরীর দুর্বল লাগে

  

সুস্থ থাকার জন্য আমাদের প্রতিদিন বিভিন্ন ভিটামিনের প্রয়োজন হয়। আর এই সব ভিটামিন নানা খাবেরর মাধ্যমে আমাদের দেহে তৈরি হয়। আর এই সবের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন হলো ভিটামিন বি ১২। এ ভিটামিন আমাদের শরীরে তৈরি হয় না।

কোন ভিটামিনের অভাবে শরীর দুর্বল লাগেএটা বিভিন্ন খাবারের মাধ্যমে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে থাকে। এই ভিটামিন আমাদের রক্ত লাল করে এবং ডি এন এ তৈরির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আর এই ভিটামিনের অভাবে আমাদের শরীর ক্লান্ত লাগে এবং শরীর দুর্বল হয়।

পোস্ট সূচিপত্রঃ কোন ভিটামিনের অভাবে শরীর দুর্বল লাগে

কোন ভিটামিনের অভাবে শরীর দুর্বল লাগে 

কোন ভিটামিনের অভাবে শরীর দুর্বল লাগে এটা অনেকেরি প্রশ্ন। এই আর্টিকেলে আমি জানাবো কোন ভিটামিনের অভাবে ক্লান্ত লাগে এবং শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য টি জানার জন্য আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পরুন। ভিটামিন বি ১২ এর অভাবে আমাদের দেহের নানা সমস্যা দেখা দেয়। যেমন মাথা ঘোরা, শরীর দুর্বল লাগা, দুশ্চিন্তা, বিষণ্ণতা আরো নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে যাতে করে শরীর দুর্বল হয়ে যায়।

ভিটামিন বি ১২ এর অভাব বেশি দিন থাকলে স্নায়বিক সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এবং কষ্টোকাঠীন্ন ও পাকস্থলির সমস্যা হতে পারে। যাতে করে আপনার চলা চলের সমস্যা হয়ে থাকে। এটা যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। কারন এই ভিটামিনের অভাব আপনার শরীরে বেশি দিন থাকতে দেওয়া যাবে না। তাহলে আপনার অনেক বড় সমস্যা হতে পারে।

শরীর দুর্বলতার কারন

শরীর দুর্বল হওয়ার অনেক কারন রয়েছে। আমাদের একটু অলসতার জন্যও আমাদের শরীর দুর্বল হতে পারে। আর কিছু কিছু ভিটামিনের অভাবে আবার শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই আমাদের সব সময় ভিটামিন, মিনারেল যুক্ত খাবার খাওয়া খুবি দরকারি। যে যে কারনে আমাদের শরীর দুর্বল হয় চলুন জেনে নিন।

আরো পড়ুনঃ কাঁচা কলা খাওয়ার ১০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা 

পর্যাপ্ত বিশ্রামের অভাবেঃ আমারা নানা রকম ব্যাস্ততার জন্য সঠিক সময় বিশ্রাম নিতে পারি না। যার কারনে আমাদের অনেক সমস্যার মধ্যে পরতে হয়। পর্যাপ্ত পরিমানে ঘুম না হলে আমাদের শরীর দুর্বল লাগে। এবং অতিরিক্ত কাজ করলে শরীরের শক্তি কমে যায় এবং শরীর দুরবল লাগে। 

মানসিক চাপের কারনেঃ প্রচুর পরিমানে মানসিক চাপ হলে সেটা আপনার দেহের উপর প্রভাব ফেলে যার ফলে আপনার শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। 

সঠিক খাদ্য অভ্যাসের অভাবঃ খাদ্য অভ্যাসের অভাবে শরীর দুর্বল লাগে। আমাদের দেহের জন্য প্রতিদিন প্রচুর পুষ্টির দরকার হয়। যা আসে আমাদের খাদ্য থেকে তাই আমাদের সঠিক নিয়মে খাদ্য খেতে হবে। শরীরে ভিটামিন ও মিনারেল এর অভাব হলে দুর্বলতা দেখা দেয়। 

ভিটামিন বি ১২ এর গুরুত্ব 

ভিটামিন বি১২ আমাদের দেহের জন্য অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ভিটামিন। এটি রক্তে সেল তৈরি করতে সাহাস্য করে। এবং এটা আমাদের মস্তিষ্কের কার্যক্রমে অপরিহার্য। নার্ভের কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে ভিটামিন বি১২। আমাদের শরীরে ভিটামিন বি১২ এর ঘারতি দেখা দিলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। 

ভিটামিন বি১২ আমাদের শরীরে শক্তি যোগায় এবং শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। শরীর দুর্বল হলে আমাদের ভিটামিন গ্রহন করা উচিত। প্রাকৃতিক খাদ্য থেকে যে আমরা যেই ভিটামিন পাবো সেটা আমাদের দেহের জন্য সাস্থকর ও নিরাপদ হয়ে থাকে। যা আমাদের শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগায়। 

ভিটামিন বি১২ কতটুকু প্রয়োজন

ভিটামিন বি১২ পানিতে দ্রবণীয় উপাদান যা আমাদের দেহের সঠিক প্রয়োজন মিটিয়ে অতিরিক্ত ভিটামিন প্রস্রাবের মাধ্যমে বাহিরে বের করে দেয়। এটা বয়সের অপর ভিত্তি করে কম বেশি হয়ে থাকে। যেমন

কোন ভিটামিনের অভাবে শরীর দুর্বল লাগে

  • বাচ্চাদের জন্য ০ থেকে ৬ মাস বয়স হলে ০.৪ মিলিগ্রাম দরকার
  • ৭ থকে ১২ মাস বয়স হলে ০.৫ মিলিগ্রাম 
  • ১ থেকে ৩ বছর বয়স হলে প্রদিতিন ০.৯ মিলিগ্রাম 
  • ৪ থেকে ৮ বছর হলে ১.২ মিলিগ্রাম ভিটামিন দরকার
  • ৯ থেকে ১৩ বছর বয়স হলে ১.৮ মিলিগ্রাম প্রয়োজন
  • ১৪ থেকে ৫০ বছর বয়সে ২.৪ মিলিগ্রাম

আমাদের দেহের জন্য প্রতিদিন এই পরিমানে ভিটামিন বি১২ দরকার। যা আমাদের দেহের দুর্বলতা কাটাতে এবং দেহে শক্তি যোগাতে অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

শরীর দুর্বলতার লক্ষন

আমি যদি জানতে পারেন আপানার শরীর দুর্বলতার লক্ষন তাহলে দ্রুত সেটার পদক্ষেপ নিতে পারবেন। তাই সকলেরি জানা দরকার যে শরীর দুর্বল হলে কি কিম লক্ষন প্রকাশ পায়। শরীর দুর্বল হলে কেবল শরীরে নয় মনেও এর প্রভাব ফেলে। তাই এই লক্ষন গুলো যদি আপনি আগে থেকে যানেন তাহলে দুর্বলতা থেকে বাচতে পারবেন। শরীর দুর্বলতার দুইটি কারন আছে শারীরিক ও মানসিক যা আমরা নিচে আলোচনা করেছি।

শারীরিক 

শ্বাসকষ্টঃ একটু কাজ করলেই শ্বাসকষ্ট হতে পারে। 

হ্রিদস্পন্দন বেড়ে যায়ঃ হুট করে হ্রিদস্পন্দন বেড়ে যায় বা অনয়মিত হ্রিদস্পন্দন হয়।

মাংসপেশির দুর্বলতাঃ একটু সামান্য কাজ করলেই মাংসপেশিতে ব্যাথা হয়। এবং দুর্বলতা অনুভব করা যায়।

অবসাদঃ শরীরে কাজ করার ক্ষমতা কমে যায় এবং সব সময় ক্লান্ত লাগে।

মাথা ঘুরানোঃ মাথা ঘুরায় বা হুট করে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। 

মানসিক 

ঘুমের সমস্যাঃ পর্যাপ্ত ঘুম না পাওয়া বা ঘুমাতে সমস্যা হওয়া। 

সৃতি শক্তি কমে যায়ঃ সৃতি শক্তি কমে যায় বা ভুলে যায়।

মেজাজ খারাপঃ খুব সহজেই মেজাজ খারাপ হওয়া এবং খুব সহজেই রেগে যাওয়া।

অমনোযোগিতাঃ কাজে মনোযোগ কমে যাওয়া বা ভুল করে ফেলা।

আরো পড়ুনঃ কাঁচা বাদাম ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা 

আপনার যদি এই লক্ষন দেখা দিলে খুব তাড়াতাড়ি এর পদক্ষেপ নিতে হবে। ভিটামিন জাতিয় খাবার খেতে হবে এবং সঠিক পুষ্টি গ্রহন করতে হবে। তাহলে এই সমস্যার থেকে মুক্তি পাবেন।

ভিটামিনের কাজ কি

ভিটামিন হলো এমন জিনিস যা ছাড়া আমরা সুস্থ থাকতে পারি না। আমরা প্রতিদিন যে খাবার খাই সেই খাবার গুলোর মধ্যে থেকে পাওয়া পুষ্টি। আমাদের দেহের জন্য যেসব পুষ্টি উপাদান দরকার পড়ে সেগুলো আমারা পাই প্রতিদিনের দৈনন্দিনের খাবারের থেকে। আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে যে সব ভিটামিন কাজ করে।

  • ভিটামিন এ
  • ভিটামিন বি
  • ভিটামিন বি২
  • ভিটামিন বি৩
  • ভিটামিন বি৫
  • ভিটামিন বি৬
  • ভিটামিন বি৭
  • ভিটামিন বি৯
  • ভিটামিন বি১২
  • ভিটামিন সি 
  • ভিটামিন ডি
  • ভিটামিন ই
  • ভিটামিন কে 

এই সব ভিটামিন আমাদের শরীরে প্রবেশ করে আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। বলা যায় যে আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে ভিটামিন সব সময় কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সব সময় কাজ করে। এবং আমাদের শরীর সুস্থ রাখে।

কোন ভিটামিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

আজকাল আমাদের জীবন যাত্রার অস্বাস্থ্যকর ও ভেজাল খাদ্য গ্রহন করে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দিচ্ছি। আমাদের দেহের একটি বড় সমস্যা হলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া। আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে নানা সমস্যা দেখা দেয়। যেমন শরীর দুর্বল লাগে এবং অল্পতেই বিভিন্ন রোগে অক্রান্ত হতে পারে।

কোনো কাজে মন বসে না এবং সামান্য কাজেই হাপিয়ে যায়। তাই আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হবে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অনেক ভিটামিন কাজ করে। তেরো ধরনের ভিটামিন রয়েছে যা আমাদের দেহের রোগ থেকে রক্ষা করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে আমাদের ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।

কোন ভিটামিনের অভাবে শরীর দুর্বল লাগে এই প্রশ্নে একটাই উত্তর ভিটামিন বি১২। যা আমাদের শরীরে কম থাকলে বা শেষ হয়ে গেলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই শরীর সুস্থ রাখতে আমাদের প্রতিদিন পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। এবং শরীরের দুর্বলতা কাটাতে ভিটামিন বি১২ সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।

ভিটামিন বি১২ রয়েছে যেসব খাবারে

ভিটামিন বি১২ প্রানিজ খাবারে বেশি পাওয়া যায়। দুধ, ডিম, মাছ, মাংস, টনা মাছ, মাশরুম, কলিজা ইত্যাদিতে ভিটামিন বি১২ বেশি পাওয়া যায়। এই ভিটামিন আমাদের দেহের জন্য অনেক উপকারি একটা ভিটামিন। যা আমাদের দেহের অনেক বড় বড় সমস্যার সমাধান করে থাকে। শরীরে এই ভিটামিন এর ঘাড়তি দেখা দিলে নানা সমস্যা হয়।

আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের ১০ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা   

আর এই সমস্যা থেকে দূরে থাকতে আপনার প্রতিদিনের খাবারে তালিকায় ভিটামিন বি১২ সম্রদ্ধ খাবার যোগ করুন। যা আপনাকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে এবং আপনার দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। অনেক রকম ভিটামিন আছে যা আমাদের দেহের সকল পুষ্টি চাহিদা পুরন করে। আর এই সব ভিটামিন পেতে আপানার এই রকম খাবার খেতে হবে।

ভিটামিন বি১২ এর অভাবের লক্ষন

ভিটামিন বি১২ এর অভাবের অনেক রকম লক্ষন পাওয়া যায়। এই ভিটামিন এর অভাবে আমাদের দেহের অনেক রকম শারীরিক ও মানসিক সমস্যা হয়ে থাকে। ক্লান্তি,অলসতা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে।আরো অনেক লক্ষন আছে যেমন

কোন ভিটামিনের অভাবে শরীর দুর্বল লাগেত্বক ফ্যাকাসেঃ দেহে ভিটামিন বি১২ এর পরিমান কমে গেলে অথবা ভিটামিন বি১২ এর অভাব দেখা গেলে ত্বক ফ্যাকাসে হয়ে যায়। এই ভিটামিন শরীরের রক্তের রং এর পরিবর্তন করে থাকে।

হাঁটতে অসুবিধাঃ পেরিফেরাল স্নাইয়ুর ক্ষতির ফলে চলাফেরার অনেক সমস্যা হতে পারে। আস্তে আস্তে শরীরে অবস হয়ে জেতে পারে।

মুখ ব্যাথাঃ ভিটামিন বি১২ এর অভাবে মুখের মধ্যে অনেক সমস্যা হয়ে থাকে। যেমন জিহ্বা ফোলা জিহ্বায় জলন্ত অনুভুতি হওয়া এই রকম।

বমি ও ডায়রিয়াঃ ভিটামিন বি১২ এর অভাবে হজম শক্তি সঠিক ভাবে কাজ করতে পারে না ফলে পেটের মধ্যে অনেক সমস্যা হয়। এটির অনুপস্থিতি পেটের ভিতর অপর্যাপ্ত অক্সিজেন এর ইঙ্গিত দিয়ে থাকে। 

মানসিক সাস্থের সমস্যাঃ ভিটামিন বি১২ এর অভাবে মেজাজ খারাপ থাকে এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ঝুকি বাড়ায়। 

লেখকের মন্তব্যঃ কোন ভিটামিনের অভাবে শরীর দুর্বল লাগে

প্রিয় পাঠক পুরো আর্টিকেলটি পড়ে আশা করে আপনারা বুঝতে পেরেছেন যে কোন ভিটামিনের অভাবে শরীর দুর্বল লাগে এবং এই সমস্যা হলে কি কি করনীয়। এবং কোন কোন খাবার খেলে এই ভিটামিন পাওয়া যাবে। এই ভিটামিন এর কাজ কি সকল তথ্য সঠিক ভাবে দেওয়া আছে। আপনি যদি আর্টিকেলটি পরে উপকৃত হন তাহলে আপনার পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করতে ভুলবেন না। 



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

স্বপ্ন বাংলার নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url