গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের ১০ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা
পোস্ট সূচিপত্রঃ গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের ১০ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের ১০ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা
- ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ
- ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়ম
- বাচ্চাদের ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা
- ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময়
- গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফল খাওয়া কি নিরাপদ
- ড্রাগন ফলের প্রকারভেদ
- ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা
- ড্রাগন ফলে অ্যান্টি অক্সিডেন্টের ভূমিকা
- শেষ কথাঃ গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের ১০ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের ১০ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় মহিলাদের নিজের প্রতি বিশেষ যত্ন ও খেয়াল রাখতে হয়। এবং সবচেয়ে বেশি সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। তাই গর্ভাবস্থায় পুষ্টিকর খাবার এবং ফলমূল প্রচুর পরিমানে খেতে হয়। আর পুষ্টিকর ফলমূলের মধ্যে অন্যতম ড্রাগন ফল। ড্রাগন ফলে আছে ভিটামিন বি, সি, কে,আয়রন, ফোলেট ও ক্যালসিয়াম। সেই জন্য এটি গর্ভবতী মহিলাদের জন্য সঠিক গুন সম্পন্ন একটি ফল।
ড্রাগন ফলে থাকা ক্যালসিয়াম নবজাতকের হাড়ের বিকাশে খুবি উপকারী। এবং এতে থাকা ফোলেট ও ভিটামিন বি বাচ্চার জন্ম গত ত্রুটি রোধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই ফলে উপকারিতা অনেক তবে এটি সঠিক পরিমানে খেতে হবে। তাই চলুন জেনে নি গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফল খেলে কি কি উপকার পাওয়া যায়।
আরো পড়ুনঃ আদার উপকারিতা ও অপকারিতা
সংক্রমন রোধ করেঃ ড্রাগন ফল যেকোনো সংক্রমন থেকে রক্ষা করে থাকে। এবং কোষের পুনর্জন্মে সহযোগিতা করে।
শারীরিক বিকাশ গঠনেঃ ড্রাগন ফলে থাকা ভিটামিন এবং আয়রন গর্ভবতী মহিলাদের শক্তি বৃদ্ধি করে। এবং এতে থাকা ক্যালসিয়াম ভ্রনের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ।
মানসিক চাপ কমায়ঃ গর্ভাবস্থায় মহিলাদের অনেক দুর্বলতা দেখা দেয়। এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। তাই গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফল খেলে এতে থাকা ভিটামিন সি গর্ভবতী মায়েরা গ্রহন করে। ফলে মানসিক চাপ কমে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
ত্বকের জন্য উপকারীঃ গর্ভাবস্থায় মায়েরা ড্রাগন ফল খেলে মা এবং বাচ্চার দু জনেরই জন্য উপকারি। ড্রাগন ফল নবজাতকের গায়ের রং সুন্দর করে এবং গর্ভবতী মহিলাদের ও ত্বক ফ্রেস রাখে।
রক্তের চর্বি কমায়ঃ ড্রাগন ফল রক্তের চর্বি কমায় এবং রক্ত সঞ্চালন সঠিক করতে সাহায্য করে।
হাড় মজবুত করেঃ ড্রাগন ফলে থাকা ফোলেট ভ্রুনের হাড় মজবুত করতে সহযোগিতা করে। এবং মায়ের হাড় ও দাঁত মজবুত করে।
ক্যলাসিয়ামের ঘাড়তি পূরণ করেঃ গর্ভাবস্থায় মহিলাদের সাধারনত ক্যালসিয়ামের ঘাড়তি দেখা দেয়। এই সময় হাড়ের ব্যাথা সহ অনেক সমস্যা হয়। তাই নিয়মিত ড্রাগন ফল খেলে এই সব সমস্যার সমাধান পাওয়া যায়।
ঘুম ভালো হয়ঃ গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলাদের ঘুমের প্রয়োজন বেশি ঘুম ভালো হয় মন ফ্রেস থাকে। তাই ড্রাগন ফল খেতে পারেন।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ গর্ভাবস্থায় মহিলাদের নানা রকম রোগ দেখা দেয়। আর এই সময়ে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকা উচিত। ড্রাগন ফলে থাকা ভিটামিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
হজমে সাহায্য করেঃ ড্রাগন ফল এমন একটি ফল যা নানা সমস্যা সমাধান করে। এর মধ্যে হজমের সমস্যা যা গর্ভবতী মহিলাদের জন্য সবচেয়ে বেশি জরুরী।
ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ
বর্তমান সময়ে ড্রাগন ফলের হাজারো পুষ্টিগুণ এবং উপকারিতার জন্য বিশ্ব জুড়ে অনেক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এই ফল দেখতে যেমন লোভনীয় খেতেও তেমন সুস্বাদু এবং পুষ্টিগুণ ও অনেক বেশি। ড্রাগন ফল একটি বিদেশি ফল কিন্তু এর উপকারিতার জন্য বাংলাদেশেও এর চাষ শুরু হয়েছে ব্যাপক হারে। ড্রাগন ফলের গুনাগুনের জন্য ডাক্তাররা এই ফল খেতে বলেন। ড্রাগন ফলের কিছু গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান। প্রতি ১০০ গ্রাম ড্রাগনে
- প্রোটিন রয়েছে ০.১৫-০.৫ গ্রাম
- আয়রন রয়েছে ০.৩-০.৭ মিলি গ্রাম
- শর্করা আছে ১০ গ্রাম
- জলীয় অংশ ৮০ গ্রাম
- খাদ্য শক্তি ৩৫-৫০ কিলোক্যালরি
- ফস্ফসার রয়েছে ১৬-৩৫ গ্রাম
- ক্যালসিয়াম রয়েছে ৬-১০ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন বি৩ ০.২-০.৪ মিলি গ্রাম
ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়ম
ড্রাগন ফল খাওয়ার তেমন কোন নিয়ম নেই। তবে এই ফলে উপকারিতার পাশাপাশি কিছু অপকারিতা থাকায় একটু খাওয়ার সময় একটু নিয়ম অবলম্বন করতে হবে। এবং গর্ভবতী মহিলাদের জন্য এ টুকু নিয়ম মেনে খেতে হবে যেমন পাকা ফল বেছে নিতে হবে। এবং ফলটা যেন টাটকা ও উজ্জ্বল রঙ্গের হয় আর ফলটা চাপ দিলে যেন একটু নরম বোঝা যায়। দাগ যুক্ত ফল কেনা থেকে বিরত থাকতে হবে।
ভালো ভাবে ফলটি পানিতে ধুয়ে নিতে হবে তার পর আপনার মতো করে খেতে পারেন। যেমন আপনি সুপ করে খেতে পারেন অথবা এমনি কেটে খেতে পারেন। আবার আপনি সালাদ বানিয়ে ও খেতে পারেন।
বাচ্চাদের ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা
সাধারণত বাচ্চারা বেশিরভাগ খাবার খেতে চায় না তাই তাদের পুষ্টি চাহিদা মেটানো কষ্টকর হয়ে পড়ে। তাই তাদের খাদ্য তালিকায় অন্যান্য খাদ্যের সাথে ড্রাগন ফল টা অ্যাড করে দিন। কারন ড্রাগন ফলে যে সমস্ত পুষ্টি উপাদান রয়েছে যেমন ভিটামিন বি, সি, ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং আরো অনেক যা বাচ্চাদের সঠিক পুষ্টি দিয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃ প্রতিদিন কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা কিসমিস খেলে কি হয়
কিন্তু এটি এক বছরের নিচে বাচ্চাদের খাওয়ানো যাবে না। ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমানে ফাইবার রয়েছে যা অন্ত্রের চলাচলে উন্নতি করে। তাই আজ থেকে বাচ্চাদের ড্রাগন ফল খাওয়ানো অভ্যাস করে ফেলুন। তাই বাচ্চারা ড্রাগন ফল খেলে তাদের শরীরে অনেক উপকার হবে। বাচ্চারা ড্রাগন ফল খেলে যে যে উপকার পাবে।
- শক্তিশালী হাড় করে।
- কিডনির জন্য ভালো।
- হার্ডকে সুরক্ষিত রাখে।
- বাচ্চারা এ থেকে ভিটামিন, আয়রন, ফাইবার ইত্যাদি পাবে।
- অন্ত্রের জন্য ভালো কাজ করে।
- অ্যান্টি অক্সিডেন্ট প্রচুর পরিমানে পাওয়া যায়।
ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময়
ড্রাগন ফল এমন একটি ফল যা দেখতে এবং খেতে খুবি অসাধারন। ড্রাগন ফলে অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে। যা আমাদের শরীররে জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ড্রাগন ফল বিভিন্ন রোগের ঝুকি কমাতে সক্ষম। এই ফলটি গর্ভবতী মহিলাদের জন্য আরো বেশি প্রয়োজনীয়। গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের ১০ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে এই আর্টিকেলে বলা হয়েছে। ড্রাগন ফল যেমন এ হাজারো পুষ্টি আছে এটা অনেকেই জানে কিন্তু কখন খেলে বেশি পুষ্টি পাওয়া যাবে সেটা যানে না। চলুন যেনে নি ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময়।
ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময় হতে রাতে। রাতের খাবার হিসাবে আপনি এই ফল টি খেতে পারেন। কারন এই ফলে ক্যালরি কম থাকে এবং ফাইবার বেশি থাকে। যা আমাদের হজম প্রক্রিয়া সহজ করতে সাহায্য করে থাকে। এছাড়া আপনি সকালে খেতে পারেন। সকালের খাবার খাওয়ার পর খেতে হবে খালি পেটে না খাওয়ায় ভালো। আবার যাদের ঘুমের সমস্যা আছে তারা রাতে খেতে পারেন ঘুম ভালো হয়।
গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফল খাওয়া কি নিরাপদ
আপনি কি এখনো ভাবছেন যে গর্ভবতী মহিলাদের ড্রাগন ফল খাওয়া নিরাপদ নাকি না। তাহলে আর ভাববেন না জেনে নিন গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফল খাওয়া নিরাপদ। কারন এই ফলে প্রচুর পরিমানে পুষ্টিগুণ আছে যা গর্ভবতী মহিলাদের জন্য বিশেষ প্রয়োজনীয়। এতে অনেক উপকার আছে যা আপনি নিজে এবং আপনার সন্তান কাজে লাগাতে পারবেন। একজন গর্ভবতী যদি প্রতিদিন নিয়মিত এই ফল খায় তাহলে তার জন্য অনেক উপকারি হবে।
গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফল খেলে মা ও বাচ্চা দুই জনেরি অনেক উপকার হবে। এর এটি সুগার ফ্রী হওয়ায় সকলে খেতে পারে। ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে বুড় পর্যন্ত। ফলের মধ্যে এই ফলটি অনেক স্বাস্থ্য বান ফল।
ড্রাগন ফলের প্রকারভেদ
ড্রাগন ফল সাধারনত অনেক প্রজাতির হয়। আর এর মধ্যে সব গুলোই পুষ্টি সম্পন্ন। এই ফল আপনার শরীরের নানা সমস্যার সমাধান করে থাকে। তাই এই ফলের প্রকারভেদ গুলো আপনার জানা দরকার চলুন জেনে নি ।
লাল ড্রাগনঃ এটি দেখতে অনেক আকর্ষণীয় লাল বর্ণের হয়। এতে লাইকোপেন নামক কিছু পুষ্টি উপাদান আছে যা আপনার হৃদয় কে ভালো রাখে এমন কি রোগ প্রতিরোধ করে।
হলুদ ড্রাগনঃ এটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ যা আপনার রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। এবং ত্বককে উজ্জ্বল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আর এতে ফাইবার রয়েছে যা আপনার পেটের সমস্যা দূর করে।
গোলাপি ড্রাগনঃ এটি অত্যান্ত মিষ্টি এটি আপনার হজম ও চামড়া ভালো রাখতে সাহায্য করে। এটি ফাইবারে পরিপূর্ণ।
বেগুনি ড্রাগনঃ এটি দেখতে ঠাণ্ডা ও খেতে অনেক সুস্বাদু। এটিতে রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা আপনার শরীর খারাপ এর জিনিস গুলোর সাথে লড়াই করে।
ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা
আমরা ড্রাগন ফলের উপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানি কিন্তু আমরা কি জানি যে ড্রাগন ফল এর খোসাও আমাদের অনেক উপকার করে থাকে। আমার ড্রাগন খেয়ে খোসা ফেলে দি কিন্তু এই খোসা নানা সমস্যার সমাধান করে থাকে। যেমন ওজন কমাতে ড্রাগন ফল এর খোসা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আপনি যদি অতিরিক্ত ওজন নিয়ে চিন্তায় থাকেন তাহলে ড্রাগন ফল এর জুস বানিয়ে খেতে পারেন এটি আপনার ওজন কমাবে।
ডায়েবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখে ড্রাগন ফল খোসা। এটি সম্পূর্ণ সুগার ফ্রী থাকায় ডায়েবিটিস রোগীরা চিন্তা মুক্ত ভাবে খেতে পারেন। হৃদরোগ এড়াতে এটি খুবি কার্যকারী এটি প্রতিদিন নিয়মিত খেলে আপনার শরীরের রক্ত সঞ্চালন নিয়ন্ত্রনে থাকে এবং হ্রদ রোগের ঝুকি কমায়।
ড্রাগন ফলে অ্যান্টি অক্সিডেন্টের ভূমিকা
ড্রাগন ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি। এটি গর্ভবতী মহিলাদের এবং গর্ভের বাচ্চার শারীরিক বৃদ্ধি ও বিকাশে সাহায্য করে। এটি ছেল ডেমেজের ক্ষতি থেকে মাকে রক্ষা করে। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমুহ মায়ের ফ্রী রেডিকেল থেকে সৃষ্টি ছেল ডেমেজ রোধ করে।ড্রাগন ফল নিয়মিত সেবন করলে এই রকম নানা সমস্যার থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। তাই এটি গর্ভবতী মহিলাদের জন্য আরো বেশি দরকারি।
শেষ কথাঃ গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের ১০ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা
আজ আমি আপনাদের গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের ১০ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে বিভিন্ন অজানা তথ্য জানিয়েছি। যদি আপনি ওপরের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে পড়ে থাকেন তাহলে আশা করি অনেক উপকৃত হবেন। আর আপনি যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আপনার কাছের মানুষদের শেয়ার করতে ভুলবেন না ধন্যবাদ।
স্বপ্ন বাংলার নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url