আদার উপকারিতা ও অপকারিতা
আদার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানলে আপনি অবাক হয়ে যাবেন। আমারা প্রতিদিন যা খেয়ে থাকি কোন না কোন মাধ্যমে এবং আমাদের খুবি পরিচিত একটি জিনিস। কিন্তু আমরা জানিই না যে এর এত গুনাগুণ আছে।
পোস্ট সূচিপত্রঃ আদার উপকারিতা ও অপকারিতা
- আদার উপকারিতা ও অপকারিতা
- আদার উপকারিতা কি কি
- আদা খাওয়ার নিয়ম জেনে নিন
- গ্যাসটিক এর সমস্যা সমাধানে
- কাশি ও গলা ব্যাথা
- বমি বমি ভাব দূর করে
- উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে সাহায্য করে
- আদার পুষ্টি গুন
- আদার অপকারিতা কি কি
- লেখকের মন্তব্যঃ আদার উপকারিতা ও অপকারিতা
আদার উপকারিতা ও অপকারিতা
আদার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে সকলেরই সঠিক তথ্য জানা দরকার। আমাদের খুব পরিচিত এই খাদ্য বস্তুতে রয়েছে নানান ঔষধি গুন। যা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সহযোগিতা করে। আদায় ভিটামিন বি৬ এবং সি বিদ্যমান যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এবং এটি দীর্ঘ স্থায়ী রোগ থেকে রক্ষা করে। এবং অন্যান্য অসুস্থতা যেমন সাধারণ সর্দি বা ফ্লু সংক্রামণ প্রতিরোধ করে।
আদা আমাদের শরীরের জন্য অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য বস্তু। আদার উপকার নিয়ে যেটাই বলি না কেন কম হয়ে যাবে। কারন এক টুকরো আদা যে কত অসুখ সারাতে পারে তা বলে বোঝানো যাবে না। আদার যেমন হাজারো উপকার আছে তেমন একটু অপকারো রয়েছে। যেমন অতিরক্ত আদা চা খেলে নিদ্রার সমস্যা দেখা দিতে পারে। আবার যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের বেশি আদা খাওয়া ঠিক না। এটি উচ্চ রক্তচাপ বেশি কমিয়ে দিতে পারে। যা শরীরের জন্য ক্ষতিকারক।
আদার উপকারিতা কি কি
আদার উপকারিতার শেষ নেই। আদা এমন একটি খাদ্য বস্তু যা রান্না করে খাওয়া হয়। এটি রান্নার সাধ দিগুণ বাড়িয়ে দেয় এবং এটি চা এর সাথে খাওয়া যায়। আর এমনি চিবিয়ে খেলে এর পুষ্টি গুন আরো বেশি পাওয়া যায়। আদায় রয়েছে পটাশিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম, জিংক, ম্যাংগানিজ, ভিটামিন এ, বি৬ ও সি এবং অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট ও অ্যান্টি ইনফ্লামেট্রি এজেন্ট বিদ্যমান। যা মানুষের শরীরের জন্য খুবি গুরুত্বপূর্ণ।
আরো পড়ুনঃ খালি পেটে কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা
আদা আমাদের দেহের নানা রোগ ভালো করে থাকে। আদায় যেসব পুষ্টি গুন রয়েছে তা একটি মানুষকে সুস্থ রাখতে কার্যকারী। আদা বিভিন্ন রোগের প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবেও কাজ করে। তাই তো বলা যায় আদা সকল রগের দাদা। আদা পেটের খাবার হজম করে এবং পেট ফাঁপা ও বদহজম থেকে রক্ষা করে।
আদা খাওয়ার নিয়ম জেনে নিন
সবাই কম বেশি আদা খেয়ে থাকেন। কিন্তু কখন কত টুকু পরিমানে আদা খেলে আপনার শরীরের জন্য উপকারী তা জানেন না। আদা এমন মসলা জাতীয় খাবার যা প্রায় সকল খাবারের সাথে খাওয়া যায়। আদা খওয়ার বিশেষ কোন নিয়ম বা সময় নেই তবে আপনি যদি বেশি ভালো ফলাফল পেতে চান তাহলে কাঁচা আদা খেতে হবে। আপনি চা এর সাথেও খেতে পারেন অথবা কাঁচা চিবিয়ে। আদা কাচা খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়।
গ্যাসটিক এর সমস্যা সমাধানে
পেটের সমস্যা দূর করতে আদার জুড়ি মেলা ভার। আদা বদহজম, গ্যাসটিক এর সমস্যা সমাধান করতে বিরাট ভূমিকা পালন করে থাকে। যাদের অতিরিক্ত গ্যাসটিক এর সমস্যা আছে তারা প্রতিদিন নিয়ম করে আদা খাবেন। চা এর সাথেও খেলে হবে। কিন্তু কার্যকারী ফলাফল পেতে কাচা আদা চিবিয়ে খাবেন। প্রতিদিন এইভাবে নিয়ম করে আদা খেলে আপনার গ্যাসটিক এর সমস্যা চিরতরে গায়েব হয়ে যাবে।
কাশি ও গলা ব্যাথা
কাশি ও গলা ব্যাথায় আদা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। হুট করে কাশি ও গলা ব্যাথা হলে দেরি না করে এক টুকরো আদা খেয়ে নিন। এই সব রোগের জন্য আদা জাদুর মতো কাজ করে। হালকা হালকা কাশি বুঝতে পারলেই আদা খান দেখবেন দ্রুত সমস্যার সমাধান পাবেন।
কাশি বা গলা ব্যাথার জন্য আপনি চা এর সাথে একটু আদা নিয়ে খেতে পারেন। অথবা একটু আদা বেটে রস বের করে সেটা এবং একটু মধু এক সাথা মিশিয়ে চা এর মতো করে ২/৩ দিন খান তাহলেই ফলাফল দেখতে পারবেন।
বমি বমি ভাব দূর করে
আপনার যদি জ্বর বা বমি বমি ভাব হয় তাহলে আদার রস আপনার জন্য একটি বড় সমাধান। এটি পরিপাক তন্ত্রের প্রদাহ কমায় এবং পেটের পেশী প্রশমিত করে। আপনার এই রকম কোন সমস্যা দেখা দিলে সাত থেকে আঁট দিন নিয়মিত আদা খাবেন। আপনার বমি বমি ভাব নিখুঁত ভাবে দূর করে দিবে এই আদা। এক চা-চামচ আদার রস একটু কুসুম গরম পানিতে দিয়ে দিনে ৫/৬ বার খাবেন তাহলে আপনার জ্বর বা বমি বমি ভাব দূর হবে।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে সাহায্য করে
প্রাচীনকাল থাকেই আদা ঔষধ হিসাবে ব্যাবহার করে আসছে মানুষ। ঔষধ হিসাবে আদা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। উচ্চ রক্তচাপে নিয়ন্ত্রনে আদা বিশেষ কার্যকারী। প্রতিদিন দুই বেলা করে একটু আদার রস, একটু মধু কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে খেতে হবে। যাদের ডায়েবেটিস আছে তারা মধু বাদ দিয়ে খাবেন। এভাবে প্রতিদিন খেলে আপনার উচ্চ রক্ত চাপ নিয়ত্রনে থাকবে।
আরো পড়ুনঃ নিম পাতার হাজারো গুন এবং উপকারিতা
সবাই চায় সুস্থ থাকতে আর সুস্থ থাকতে হলে পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। অথবা যে সব খাবারে অনেক প্রকার ভিটামিন, খনিজ, ক্যালসিয়াম ইত্যাদি আছে সে সব খাবার খেতে হবে। এবং যে সব খাবারে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আছে যেমন আদা এমন একটি খাবার।
আদার পুষ্টি গুন
আদার পুষ্টি গুন বলে শেষ করার মতো না। আদা পুষ্টি গুনে ভরপুর একটি খাদ্য বস্তু। আদার অধিক পরিমানে পুষ্টিগুণ থাকায় আদা জটিল ও কঠিন রোগের ঔষধ হিসাবে ব্যাবহার হয়। আদার কিছু পুষ্টিগুণ প্রতি ১০০ গ্রাম আদায় রয়েছে
- ভিটামিন সি ৭.৭ মিলি গ্রাম
- সোডিয়াম ১৪ মিলি গ্রাম
- প্রোটিন ৩.৫৭ গ্রাম
- ভজ্য আঁশ ৩.৬ গ্রাম
- ক্যালরি ৭৯ গ্রাম
- লৌহ ১.১৫ গ্রাম
- কার্বো হাইটে ১৭.৮৬ গ্রাম ইত্যাদি।
আদার এই রকম আরো অনেক অনেক পুষ্টি আছে। আদার এতো পুষ্টিগুণ থাকায় আদা আমাদের শরীরের জন্য এত উপকারি।
আদার অপকারিতা কি কি
সকল কিছুরই যেমন ভালো দিক থাকে তেমন খারাপ দিক ও থাকে। তেমনি এতক্ষন যেমন আদার উপকার সম্পর্কে জানলেন এরকম আদার কিছু অপকারো আছে। আদা যেমন মানুষের হাজারো উপকার করে তেমন নিয়মের বাহিরে খেলে মানুষ বিপদেও পড়তে পারে। অতিরিক্ত আদা খেলে যেসব সমস্যা হয়
- অতিরিক্ত আদা খেলে অনিদ্রার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- হৃদযন্ত্রের গতি বেড়ে যাওয়ার মতো সমস্যা হতে পারে।
- দৃষ্টি শক্তি দুর্বল হয়ে যেতে পারে এবং চোখ ঝাপসা হয়ে যেতে পারে।
- গর্ভবতী মহিলাদের আদা খাওয়া উচিত না এতে প্রিম্যাচিউর বাচ্চা হয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে।
- অতিরিক্ত আদা খেলে ত্বকের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- যাদের ডায়েবেটিস আছে তাদের আদা খেলে উচ্চ রক্ত চাপ বেড়ে যেতে পারে।
সব শেষে বলা যায় আদার যেমন উপকারিতা আছে তেমন অপকারিতাও আছে। তাই সঠিক নিয়ম মেনে খেলে আপনার শরীররে জন্য ভালো।
লেখকের মন্তব্যঃ আদার উপকারিতা ও অপকারিতা
প্রিয় পাঠক এই পোস্ট থেকে আদার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনেছেন। আদার যেমন ভালো অনেক গুন আছে তেমন কিছু খারাপ বিশিষ্টও আছে। সকল বিষয়ে সঠিক তথ্য এই পোস্ট টে দেওয়া আছে। আদার হাজারো গুন পাওয়ার জন্য নিয়মিত আদা খেতে হবে এবং সঠিক মাপ অনুযায়ী। আশা করি আপনার এই পোস্টটি পড়ে উপকার হবে। আপনি যদি এই পোস্টটি পড়ে উপকৃত হন তাহলে আপনার পরিচিতদের শেয়ার করতে ভুলবেন না।
স্বপ্ন বাংলার নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url