নিম পাতার হাজারো গুন এবং উপকারিতা

নিম পাতার হাজারো গুন এবং উপকারিতা সম্পর্কে জানুন। নিম গাছ একটি এমন গাছ যার পাতা থেকে শুরু করে শিকড় পর্যন্ত শুধু ঔষধি গুণাগুণে ভরপুর। নিম দিয়ে হাজারো রোগের চিকিৎসা হয়। আমাদের বাড়ির আশে পাশে অযত্নে বড় হওয়া নিম গাছের গুনের শেষ নেই। 
নিম পাতার হাজারো গুন এবং উপকারিতা
আজকে আপনারা এই পোস্ট এর মাধ্যমে জানতে পারবেন নিম পাতার নানা উপকারিতা। যেমন কি কি রোগের জন্য নিম পাতা ব্যবহার করবেন নিম পাতার কেমন গুনাগুণ ইত্যাদি বিষয়। নিম পাতার উপকারিতা জানার জন্য পোস্টটি সম্পূর্ণ পরুন।

পোস্ট সূচিপত্রঃ নিম পাতার হাজারো গুন এবং উপকারিতা 

নিম পাতার হাজারো গুন এবং উপকারিতা

নিম পাতার হাজারো গুন এবং উপকারিতা সম্পর্কে জানলে আপনি অবাক হয়ে যাবেন। আমাদের অবহেলিত গাছে যে এত গুনাগুণ আছে তা বলে শেষ করা যাবে না। প্রাচীনকাল থেকেই আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় নিম এর ডাল, ফল, ছাল, শিকড়, পাতা ইত্যাদি ব্যবহার হয়ে আসছে। এর মধ্যে নিম এর পাতার গুনাগুণ একটু বেশি বলে সকল ক্ষেত্রে নিম পাতা বিশেষ ভাবে উল্লেখজগ্য। নিম এর পাতা, ছাল, বাকল যেমন নানা ঔষধি কাজে ব্যবহার করা হয়। তেমন নিম এর কাঠ দিয়েও অনেক দামি দামি ফার্নিচার তৈরি হয়।

নিম পাতা কি কি কাজে ব্যবহার হয় সেটা সকলে জানেন না। নিম পাতা একটি ঔষধি পাতা যার গুনাগুণ গুনে শেষ করা যায় না। নিম পাতার এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান মানুষের দেহের নানা রোগ ভালো করে থাকে। সঠিক ভাবে নিয়মিত নিম পাতা ব্যবহার করলে ত্বক, চুল, দাত, মুখের রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে।

চুলকানি নিরাময়ে নিম পাতা

বর্তমান সময়ে মানুষের অনিয়মে অনেক রকম চুলকানি জাতিয় খাবার খাওয়ার জন্য মানুষের চুলকানির সমস্যা বেশি হয়েছে। আর এর জন্য আপনাদের চিন্তার কোন শেষ নেই। আশা করি এই পোস্টটি পড়ার পর আপনার আর এই বিষয়ে কোন চিন্তা থাকবে না। নিম পাতার হাজারো গুন এবং উপকারিতা আছে। আর চুলকানি নিরাময়ে নিম পাতার জুড়ি মেলা ভার।
  
চুলকানি ভালো করতে প্রথমত পানির মধ্যে নিম পাতা দিয়ে পানি গরম করে সেই পানি দিয়ে গোসল করলে চুলকানি হয় না  এবং চুলকানি যদি থাকে তাহলে ভালো হয়ে যায়। আবার নিম পাতা বেটে চুলকানি স্থানে ৭/৮ দিন ব্যবহার করলেই জাদুর মত গায়েব হয়ে যাবে চুলকানি কারন এই সব রোগে নিম পাতা অসাধারন কাজ করে।

খুসকি বিনাশে নিম পাতা

হাজারো মানুষ আছে যাদের শীত কাল আসলেই খুসকিতে মাথা ভরে যায়। খুসকি বিনাশে নিম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। নিমে রয়েছে ছত্রাক নাশক এবং ব্যাকটেরিয়া নাশক উপাদান যা খুসকি বিনাশে কার্যকারী। নিম পাতা বেটে পেস্ট করে মাথার মাষে লাগিয়ে ২০/২৫ মিনিট রেখে শুকিয়ে গেলে তার পর ভালো করে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

এভাবে সপ্তাহে ২/৩ দিন ব্যবহার করুন এবং ১ মাস ব্যবহার করলেই বুঝতে পারবেন ফলাফল। নিম পাতার হাজারো গুন এবং উপকারিতা এর শেষ নেই। এই নিয়মে নিম পাতা ব্যবহার করলে খুসকি তো দূর হবেই সাথে সাথে চুলের গোঁড়া ও শক্ত হবে চুল পড়া বন্ধ হবে।

চুল পড়া দূর করতে নিম পাতার ব্যবহার

চুল পড়া দূর করতে নানা পদ্ধতি অবলম্বন করছেন আপনি কিন্তু কোন মতেই কাজ হচ্ছে না। তাহলে একবার নিম পাতা ব্যবহার করে দেখুন আপনার চুল পড়া চিরতরে দূর হবে। অনেক কারনে মানুষের চুল পড়ে যেমন মাথাই ঘা হলে খুস্কি হলে আবার চুলের গোঁড়া দুর্বল হলে চুল ঝরে পড়ে। আর অনেক মানুষ আছে যাদের অল্প বয়সে চুল পড়ে মাথা ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। নিম পাতার হাজারো গুন এবং উপকারিতার মধ্যে এটি একটি।
নিম পাতার হাজারো গুন এবং উপকারিতা
চুল পড়া দূর করতে আপনি নিম পাতা ভালো করে শুকিয়ে তার পর গুড়ো করে তেলের সাথে মাথায় লাগাতে হবে। অথবা আপনি চাইলে কাঁচা নিম পাতা পিষে মাথায় লাগাতে পারেন। সপ্তাহে ২/৩ দিন এই ভাবে লাগালে চুল পড়া বন্ধ হবে।

দাঁতের সমস্যা সমাধানে

দাঁতের সুস্থতায় নিম পাতার জুড়ি মেলা ভার। প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ দাঁত ভালো রাখার জন্য নিমের ডাল এবং পাতা ব্যবহার করে আসছে। নিমের ডাল দিয়ে মেসয়াক করলে দাঁত মজবুত হয় এবং রোগ থেকে সুস্থ থাকে। দাঁতের রক্তপাত, দাঁতের পচন ইত্যাদি থেকে রক্ষা পেতে নিম পাতার রস পানিতে মিশিয়ে সেই পানি দিয়ে কুলকুচি করলে এসব রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

ত্বকের যত্নে নিম পাতা

প্রতিটা মানুষই চায় তাকে দেখতে সুন্দর লাগবে ত্বকে উজ্জলতা থাকবে ত্বক ফ্রেস ও মসৃণ হবে। আর এই ত্বকের যত্নে নিম পাতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। 
ব্রণ নিরাময়েঃ নিম পাতার রস পানিতে মিশিয়ে মুখ ধুতে পারেন অথবা নিম পাতা বেটে পেস্ট করে ব্রণে লাগালে ব্রণ ভালো হয়ে যাবে। নিম পাতার অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল গুন ত্বকের ব্রণ দূর করে।
ত্বকের উজ্জলতা বাড়াতেঃ নিম পাতা ত্বকের বাহিরের এবং ভিতরের সকল ময়লা দূর করে এবং ত্বকে উজ্জলতা বাড়ায়। নিম পাতার পেস্ট এর সাথে একটু মধু মিশিয়ে মুখে লাগালে আরো ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।
ত্বকের সংক্রমণ দূর করতে সাহায্য করেঃ নিম পাতা ত্বকের চুলকানি, দাদ, ফাঙ্গাল ইনফেক্সান নিরাময়ে কার্যকারী ভূমিকা পালন করে। নিম পাতা পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি দিয়ে গোসল করলে এই সব রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।

রোগ প্রতিরোধে নিম পাতার গুরুত্ব

রোগ প্রতিরোধে নিম পাতা অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। নিম পাতার হাজারো গুন এবং উপকারিতা আছে। তার মধ্যে রোগ প্রতিরোধ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নিম গাছের পাতা থেকে শিকড় সব টুকুই ওষধি গুনে ভরপুর। নিম পাতা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বারায়। 
ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ করতেঃ নিম পাতা ম্যালেরিয়া জনিত সমস্যা দূর করে। নিম পাতা পুড়িয়ে ধোঁয়া করে সেই ধোঁয়া বাড়িতে ছড়িয়ে দিলে মশার উপদ্রফ কমায় এবং ম্যালেরিয়া বাহিত মশা থেকে রক্ষা করে।
ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করতেঃ নিম পাতা শরীরে রোগ সংক্রমণ প্রতিরোধ করে। সকালে নিম পাতার রস পান করলে অথবা নিম পাতা চিবিয়ে খেলে ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী হয় যা রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ব্যাকটেরিয়ার বিরুধে কাজ করেঃ নিম পাতা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। নিম পাতা পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি পান করলে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হবে না। 

ওজন কমাতে নিম পাতার ভূমিকা

ওজন কমাতে নিম পাতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিম পাতা শরীর থেকে টক্সিন বের করে এবং মেটাপলিজম বৃদ্ধি করে যা শরীরের ওজন কমাতে কার্যকারী। নিম পাতার রস মেদ কমাতে সাহায্য করে। নিম পাতা শরীরের ক্ষতিকারক পদার্থ বের করে ফেলে। প্রতিদিন সকালে নিয়ম করে নিম পাতা ভেজানো পানি পান করলে অতিরিক্ত চর্বি কমাতে সাহায্য করে।

পেটের সমস্যা এবং হজমের জন্য

নিম পাতার একটি বড় গুন পেটের সমস্যা সমাধান করে। নিম পাতা হজম শক্তি বাড়ায় এবং অন্ত্র পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। এখন দেখা যায় একটু ভাজা পোড়া খাবার খেলেই পেটে নানা সমস্যা দেখা দেয়। যেমন
নিম পাতার হাজারো গুন এবং উপকারিতা

  • গ্যাসের সমস্যা
  • হজমের সমস্যা
  • অন্ত্রের সমস্যা
এই রকম নানা সমস্যা দূর করতে নিম পাতা জাদুর মত কাজ করে। নিম পাতার হাজারো গুন এবং উপকারিতা আছে। যা একটি মানুষকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

শেষ কথাঃ নিম পাতার হাজারো গুন এবং উপকারিতা

প্রিয় পাঠক আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়েছেন নিম পাতার হাজারো গুন এবং উপকারিতা। আর আপনি যদি আজকের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়েন তাহলে নিম পাতার সকল উপকার সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। নিম পাতা একটি ঔষধি পাতা যার গুনাগুণের শেষ নেই। কি কি কাজে নিম পাতা ব্যবহার হয় সকল বিষয় জানতে পেরেছেন। প্রিয় পাঠক আপনি যদি এই পোস্টটি পরে উপকৃত হন তাহলে আপনার বন্ধুদের শেয়ার করতে ভুলবেন না।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

স্বপ্ন বাংলার নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url